বিশ্ব সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: সারা ভারত জুড়ে চলছে নবরাত্রি উদযাপন। অন্যদিকে, বাঙালিরা তাদের বড় পূজা দুর্গা পুজোতে মেতেছে।কুমারী পুজা শারদিয়া এই উপাসনার অন্যতম অঙ্গ। নবরাত্রির সমস্ত দিন যেমন কুমারী মেয়েদের খাওয়ানো রীতি রয়েছে , তেমনি বাঙালি পুজোর অষ্টমীর দিন কুমারী মেয়েদের পূজা করার রীতিও রয়েছে।
আজ মহাঅষ্টমী। আজ সকালের সাথে সাথেই দুর্গাষ্টমীর শুভ উপলক্ষে কুমারী পূজা শুরু হবে। এর আগে আসুন জেনে নেওয়া যাক এই উপাসনার পৌরাণিক ও শাস্ত্রীয় ইতিহাস।
ব্রহ্মধর্ম পুরাণ আমাদের বলে যে দেবতারা নিজেরাই দেবীর এই কুমারী রূপের পূজা করেননি। এই গল্পটি আবার শারদীয়া দুর্গাপুজোর সাথে অন্তর্ভুক্ত নয়!
আমরা সকলেই জানি যে বসন্তে দেবী দুর্গার পূজা প্রচলিত ছিল।কেন না সেই সময়ে সূর্য অবস্থান করেন তাঁর উত্তরায়ণ গতিতে। পুরাণ অনুসারে, এই সময়েই দেবতারা জাগ্রত হন। তাই চৈত্র মাসের নবরাত্রিই ছিল দুর্গার আরাধনার জন্য প্রশস্ত এবং প্রচলিত।
অন্যদিকে, অযোধ্যার সর্বশ্রেষ্ঠ রাজপুত্র রামকে দেবী আরাধনার করতে হবে কারন লঙ্কার শাসক রাবণ সীতাহরণ করেছিলেন। ঘটনা শরত্কালের শুরুর দিকে হয়েছিল। রাবণ শিবের ভক্ত ছিলেন বলে রামের পরাস্ত করতে দেবীর অনুগ্রহের দরকার পড়েছিল!
দেবতারা কীভাবে এই কাজে রামকে সাহায্য করতে পারে তা জানার জন্য ব্রহ্মা দ্বারস্থ হন। সেই সময়, সূর্যের দক্ষিণায়ণ চলছে, অর্থাৎ তা দেবীর ঘুমের সময়ে। সুতরাং ব্রহ্মা যখন স্তব করেন, তখন দেবী কুমারীর ছদ্মবেশে উপস্থিত হন। পরামর্শ দিলেন বিল্বমূলে অকালবোধনের। দেবতারা মর্ত্যে এসে দেখলেন যে এক বেলগাছের শাখায় ঘুমিয়ে রয়েছে এক বালিকা। তাঁরা বুঝলেন, ইনিই সাক্ষাৎ দেবী! অতঃপর তাঁরা সেই বেল গাছের মূলে অবস্থান করে স্তব করলেন দেবীর। সেই বালিকা জাগরিত হয়ে ধারণ করলেন চণ্ডিকার রূপ! অন্য দিকে আবার বৈষ্ণো দেবীর উপাখ্যান বলে যে মহালক্ষ্মী, মহাসরস্বতী আর মহাকালীর এই মিলিত রূপে দেবী স্বয়ং ভক্তদের নবরাত্রির সব দিনেই কুমারী কন্যাদের ভোজন করানোর আদেশ দিয়েছিলেন!
শাস্ত্র এ ক্ষেত্রে বলছে যে এক থেকে ষোল বছরের কুমারীরা দেবীর ষোলটি রূপের প্রতীক। এক বছর সন্ধ্যা, দুই সরস্বতী, তিন ত্রিধা, চার কালিকা, পাঁচ সুভগা, ছয় উমা, সাত মালিনী, আট কুষ্ঠিকা, নয় কালসন্দর্ভা, দশ অপরাজিতা, এগারো রুদ্রাণী, বারো ভৈরবী, তেরো মহালক্ষ্মী, চোদ্দ পীঠনায়িকা, পনেরো ক্ষেত্রজ্ঞা এবং ষোল বছর বয়স অন্নদা বা অম্বিকা রূপের প্রতীক।