নায়ক-নায়িকারা নীল আকাশের ঘনিষ্ঠ হয়ে নাচছেন। পরমব্রত এসে রাইমাকে বলে, “তুমি আমার চোখ ও ঠোঁটে লেগে আছো।” অর্জুন এবং মধুমিতার অন্তরঙ্গ দৃশ্যগুলি সারা নেট দুনিয়া উত্তপ্ত ছড়িয়েছে … এটি এখন অতিতের ঘটনা মনে হচ্ছে! চোখ, ঠোঁট, গালের সাথে লেগে থাকার সময়টি সম্ভবত শেষ হতে চলেছে। কারন লকডাউন চলছে শুটিং বন্ধ ! লকডাউনটি কোনও না কোন দিন উঠবে।তখন আবার শুটিং আবার শুরু হবে। তবে অন্তরঙ্গ দৃশ্য, নায়ক-নায়িকার গাড় প্রেম, বেড সিন আবার কি ফিরে পাওয়া যাবে? অভিনেতারা করোনার চিন্তা মাথায় নিয়ে সে সব দৃশ্যে অভিনয় করতে কতটা স্বাচ্ছন্দ বোধ করবেন ? এই সব কিছু বাদ দিয়ে কি ছবি তৈরি করা সম্ভব? চিত্রনাট্যের সঙ্গে আপোস নাকি কলাকুশলীদের সুরক্ষা? এগিয়ে কে?
পরিচালক সুজিত সরকার অনেক দিন আগেই প্রশ্নটা তুলেছিলেন, “করোনা আতঙ্ক শেষ হয়ে গেলেও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সহজে কাটবে কি ?” চুম্বনের দৃশ্য বাদ দিয়েও, হাত ধরাধরি বা কাছে এসে কথা বলা সেসব যে মানবে না সেন্সর! সিনেমা দুনিয়া কী বিবেচনা করছে? রাজ চক্রবর্তী কী বলছেন? “আমি কলাকুশলীদের নিরাপত্তার সাথে যেমন আপস করতে পারি না, তেমনি আমার চলচ্চিত্রের প্লটটি পরিবর্তন করাও আমার পক্ষে সম্ভব নয়। পরিচালক হিসাবে, আমাকে কোনওভাবেই সীমার মধ্যে কাজ করার দরকার পড়েনি।যেহেতু আমি যেহেতু আমি ধারাবাহিকের প্রযোজনাও করি, তাই কাটশটগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে । এক জনের সিনটা আগে তুলে নিয়ে পরের জনেরটা অন্যদিনে তুলে দু’টিকে মিলিয়ে দেওয়া— এ ঘটনা তো আগেও হয়েছে। আর যেহেতু ফ্যামিলি ড্রামাগুলোতে খুব একটা ঘনিষ্ঠ দৃশ্য দেখানো হয় না তাই খুব একটা আসুবিধা হবে । তাই আমি অনুভব করি যে ধারাবাহিকতা কিছুটা আপস করেই চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে তবে সিনেমার ক্ষেত্রে পুরো বিষয়টি একধরনের ঝামেলা। তবে এর মধ্যে, আমাকে সর্বদা সরকারের নির্দেশ পালন করা দরকার, ”রাজ বলেছিলেন।
ঘনিষ্ঠ দৃশ্য, চুমু, বেডসিন এ সব না হয় বাদ-ই দেওয়া গেল কিন্তু ফাইট সিন? হাওয়ার মতো উড়ে এসে নায়ক ধাঁই করে ভিলেনকে উপড়ে ফেললো মাটিতে। গলা টিপে টানতে টানটে সোজা দেওয়ালে ঠুকে দিল মাথা। সে খানেও যে হিউম্যান টাচ! পরিচালক ইন্দ্রাশিষ আচার্য আবার এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য একটাই পন্থা দেখতে পাচ্ছেন। যে যে অভিনয় করবেন শুটিং শুরু করার আগে তাঁদের টেস্ট করানো। “যদি রিপোর্ট নেগেটিভ আসে তা হলে তো যে কোনও দৃশ্যেই অভিনয়েই আর বাধা থাকবে না”, বলছিলেন পরিচালক।
বাই যখন চিন্তিত, কেউ কেউ যখন ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয়ে সরাসরি না বলে দেবেন বলে জানিয়েছেন, ঠিক সেই সময়েই মধুমিতা সরকারের মুখে উল্টোপুরাণ, “বডি টেম্পারেচার মেপে কাজে আসতে হবে। চরিত্রের প্রয়োজনে যদি আমাকে করোনা-কালেও ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করতে হয় করব। এত প্যানিক করে কী করব?’’
কী হবে কেউ জানেন না। তবু কলাকুশলী থেকে টেকনিশিয়ান… সেটে ফিরতে মরিয়া সবাই। কত দিন রোল, ক্যামেরা, অ্যাকশনে মুখর হয়নি টলিপাড়া!