করোনা-আবহের জন্য অন্য বারের মতো জাঁকজমক করে নয়, এ বছর নমো নমো করে রেড রোডে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান পালন হবে। ১৫ মিনিটেই মধ্যে শেষ করতে হবে স্বাধীনতা দিবসের মূল অনুষ্ঠান।অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া সকলকে মানতে হবে করোনা-বিধিনিষেধ। যাঁরা কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন, তাঁদের পরতে হবে মাস্ক, সঙ্গে রাখতে হবে স্যানিটাইজ়ারও।
এ বারের স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে থাকছে কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশের দু’টি কন্টিনজেন্ট। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের একটি দল অংশগ্রহণ করার কথা, যারা সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফের কথা বলবে। তবে করোনার কারণে এ বারের অনুষ্ঠানে অতিথি সংখ্যা থাকবে সীমিত। তাঁদের বসার জন্য আসন সারিবদ্ধ ভাবে রাখা থাকবে না। নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে রাখা হবে অতিথিদের আসন।
সূত্রের খবর,এ বারে ওই অনুষ্ঠানে ২৫ জন প্রথম সারির করোনা-যোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। রাজ্যের তথ্য সংস্কৃতি দফতর সেই ২৫ জনের নামের তালিকা তৈরি করছে। মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চের বাঁ দিকে তাঁদের বসার ব্যবস্থা করা হবে।কুচকাওয়াজের শেষে ছোট করে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করছে ওই দফতর, যাতে বিভিন্ন জেলার শিল্পীরা অংশগ্রহণ করবেন। তবে কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, করোনার কথা মাথায় রেখেই এ বারের মূল অনুষ্ঠান হবে মাত্র ১৫ মিনিটের। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া সকলকেই করোনা বিধি বা সুরক্ষা মেনে চলতে হবে।
সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে কুচকাওয়াজের মহড়ার দিনও কমিয়ে আনা হয়েছে। গত বছর যেখানে সাত-আট দিন ধরে রেড রোডে কুচকাওয়াজের মহড়া চলেছিল, সেখানে এ বছর তা হবে মাত্র পাঁচ দিন ধরে। বৃহস্পতিবার ছিল সেই মহড়ার দ্বিতীয় দিন। তবে এ বারে অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য কন্টিনজেন্ট সংখ্যা কম, তাই অন্য বারের মতো রাস্তা আটকে মহড়া এবার হবে না। মহড়া শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে রেড রোডের দু’দিক বন্ধ রাখা হবে। মহড়ার দিনগুলিতে খিদিরপুর রোড, পলাশী গেট রোড, হসপিটাল রোড, লাভার্স লেনের মতো রাস্তা আটকানো এবার হচ্ছে না। তবে ১৩ আগস্ট, চূড়ান্ত মহড়ার দিন ওই সব রাস্তা আটকানো হতে পারে।
মহড়ার কারণে রাস্তা আটকানো না হলেও নিরাপত্তার জন্য বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করেছে পুলিশ।কারন ২০১৬ সালের ১৩ জানুয়ারি সকালে, প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের মহড়া চলাকালীন একটি বেপরোয়া গাড়ি পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকে এসে পিষে দিয়েছিল বায়ুসেনার কর্পোরাল অভিমন্যু গৌড়কে। সেই দুর্ঘটনার কথা মাথায় রেখে এ বারও রেড রোডের দু’দিকে ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড করা হয়েছে। প্রথমে লোহার গার্ডরেল, তার পরে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি ‘সিজ়ার ব্যারিকেড’ এবং তারও পরে পুলিশের গাড়ি আড়াআড়ি ভাবে রাখা হচ্ছে, যাতে যে কেউ সহজে ঢুকে আসতে না পারেন।